খেলা
আমি।। দীর্ঘ্যক্ষণ ফাতনা ডুবিয়ে;
খুব নিঃশব্দ, খুব একান্ত-
মাছধরার খেলাটি ভালবাসি
মাছ ধরতে নয়।
তৃতীয়।। আহ্, কি যে বিরক্ত করে এই সব!
সারাদিন চুপ বসে থাকা,
কথা নেই, বার্তা নেই, যত্ত বেয়াক্কেলে।
আমি।। অপেক্ষা জান না বুঝি?
তৃতীয়।। কি হবে জেনে?
আমি।। ব্যাক্তিগত চিঠি তুমিও লিখতে।
চিঠি প্রসঙ্গে এবং ঝরণা
আমি।। সারারাত বসেছিলাম। শব্দগুলো
জ্বলছিল ভেতরে। মুঠোফোনে কয়েকটা…।
তুমি, কুড়িয়ে নেবে ভাঙা ঝিনুকের ভীড় থেকে।
বন্দর, বন্দর কেন সরে যাচ্ছ?
আমি প্রত্যাগত জাহাজ,
দরজা খোলো, দরজা খুলে দাও!
তৃতীয়।। আচ্ছা, নিকোটিনে প্রোটিন নেই?
আমি।। বিয়াত্রিচে, কাব্য-সংলগ্ন উঠোনে হেঁটে দেখ
গাছেরা অক্সিজেন খায়।
কবিতাও মানুষ-খেকো।
তৃতীয়।। এ সব বুড়বুড়ি কথা দিচ্ছ?
ধরলেই ফেটে যায় বুদবুদে যে ঈশ্বর
তাকে শালোয়ারের দড়িও করিনা।
আমি।। এই সব শব্দগুচ্ছ, মানেহীন? অবিরাম
বয়ে চলে প্রতীক্ষার ভিতরে অথচ
সন্ধিও জানে। শুধু ছুঁতে জানলে না?
জানলে না কতোটা আশ্লিষ্ট হলে মধ্যরাত,
ভোররাত, বিরহ-দুপুরেও
একটি শব্দের মধ্যে ঝর্ণা খুঁজে দেখা যায়?
‘আমি আছি’ লিখতে এতই কষ্ট ছিল?
তৃতীয়।। যখন মাছ ধরছি না তখন
তোমাকে বিদায় দিলে আমার
ভারমুক্তি ঘটে। খেলাটি শেষ
আমিও এক্কা-দোক্কা
দিগন্তের দিকে চলে যাব।
আমি।। পানশে হর্তুকি দিয়ে সত্যিই
ছাঁচি পান হয় না।
আয়োজন পন্ড করে যাবতীয়
মধ্যম আসর। যে সন্ধ্যায়
তুমি লেখোনি একটিও বাক্য,
সেদিন স্লিপার, রেল এবং সভ্যতা থেকে
জঙ্গল চিরে চলা রেললাইন খুলে নিয়েছি।
প্রতিটি আরণ্যক নিরাপদ।
কেনাবেচাকে দাঁড়ি দিয়েছি।
আমি আর তুমি-র মাঝখানে বসিয়েছি কমা,
প্রেম রেখেছি এবং দিয়ে। আমার চিঠিগুলো
কার্তিকের মাঠে হিম; প্রতিটি
প্রমাদকণাকে পরমান্ন করেছি পরিশ্রমে।
আমি একান্ত মাছধরার খেলাটি থেকে
ধৈর্য্য নিয়েছিলাম। জল সরে গেলে যে সব
অর্থহীন সেই সব ছিপ, ফাতনা, চার
সব এখন সান্ধ্যভাষা ভাষ্কর্য্য;
আমাকে নাই বা নিলে,
ঘোমটা খসিয়ে নতুন ভাষাটি
তোমাকে ইচ্ছাপত্রে লিখে দিলাম।