যাই

কাউকে কিছু বলার শব্দগুলো নিভে যাচ্ছে
তমোঘ্ন, রাত এ জড়োয়া রাত,
স্বেদবিন্দু তারা হয়ে ফুটিল
মনে হয়,

যাই-
অনেকদিন হল
প্রবাসে কষ্টসূর্য প্রখর;

মৃদু বাংলা, ধাতব বাংলা
ধ্বণ্যাত্মক নখরে পালিশ
আলোয়ান আলতোতে টানা
সাদা পাজামা,
মেজানিন ক্যাকটাস ফ্লোর
উদ্ভাসিত ফ্লাওয়ার ভাস
হুজুরী মধ্যবিত্তপনা
ঘড়িয়াল বাজারলতাটি
নিকোনো বাগানে

যাই-

মা, সামান্য দুটি ডাঁটা দিয়ে
অমৃত রেঁধেছেন আজীবন,
একক ক্ষেতে ওঠে বিষ
নির্লজ্জ যখন

যাই-

অ্যালজোলাম

ডাকছি না,
দেদার সমুদ্র স্বরলিপি হোক
গানের খাতায়

বেদনা আঁকছিনা,

মানুষের থেকে
অ্যাসিডিটি,মতান্তরে
অ্যালজোলাম
তেমন কাব্যিক না
অথচ লৌকিক;

ট্রামলাইনের পুনরুত্থানে
ম্লান কেউ আসছে না
স্মৃতিকাতরতাপ্রদেশ-
কলকাতা ভেসে যাচ্ছে
জনস্রোতে,
যে শহর আজ আছে
গতকাল সে অন্য কেউ!

থাকছে না,
কিছুই এক থাকছে না…

আহ্লাদী

যখন জ্যোৎস্না ভাবি
গান্ধারে আকাশ ভাসে,
পোড়া মোবিলের গায়ে
লেগে আহ্লাদী চাঁদ,
বুক খালি করে
ঐ শুদ্ধ মধ্যমা…

সম্পর্ক

এখন পাথর উঠে আসে,
কাদাবালি, সন্তাপ
নদীটির থেকে-

এমন ছিল না সেদিন,
ভেসে যেত ডিঙা,
ব্যাবিলন, সুমাত্রা, ঈজিপ্ট,
এমতি ছিল না সকালবেলা;

এ নদীকে সম্পর্ক বলে ডাকো
ধীরে ধীরে মরে হেজে যাবে!

বজ্রযোগিনী

অন্যান্য কথনের পরে ভূমিকা,
নিবেদনে আছে পড়ে আলো,
দীর্ঘ ক্ষেত্রফল বহ্নিমান য’ফলা
এভাবে ছেড়ে গেলে ত্রিভূজ
সে কি ছিল বজ্রযোগিনী?

হে পদ্মাসনাস্থিত, করতলে
কুশ, সমিধ ও চিতা
লিখেছ উপসংহার পূর্বেই
এবে জ্বলে ওঠো দারুণ একাকী!

যাবার সময়

এই তো এলাম!

এখনি যাওয়ার হাওয়া
উত্তর থেকে আসছে-
হাসছে,
চুল থেকে কপাল দুলছে
আবর্তনে যেমন ব্রহ্মাণ্ড
ফোটে অপলক ফুল
রাত্রেও টুপটাপ
কি আশ্চর্য্য কাণ্ড!

স্ট্রীট ল্যাম্পের কৌণিকে
গাছভেজা বারান্দায়,
অবশিষ্ট আয়ু ঠেস দিলো,
অমনি দিকে দিকে বার্তা রটিলো
যে কথা গোপন ছিল-
ওই বাঁকা কোমরের হার
নাভির নীচে যেভাবে কাটালো
আপামর জীবন,
কুচের মধ্যপ্রাদেশিক তিল,
তালময় চলতম্বুরা সঙ্গত
এ সংক্রান্ত যা যা অগোছালো
সব রাষ্ট্র হয়ে গেল,

যেই এলাম,
যেই উত্তুরে হাওয়া
মোরগ ঘোরালো
মেহফিলে,
অমনি যাবার সময় করে এল?