আমি।। সারাদিন জলকে বুঝতে ঘুরেছি
জল, কিছুতেই ধরা পড়ছে না;
যা ধরা পড়ছে তা হল
গতি, স্থিতি,জলের ভৌত গঠন
তার ডোল, অবয়ব সব-
শুধু জলকে ধরতে পারছি না।
অথচ তুমি নিয়েও গ্যাছ জলের কাছে-
বেয়াত্রিচা।। আত্মহত্যার কিছু আগে
আত্মহত্যার কিছু পরেও জল-
আমি।। কি করুণা তোমার অনিন্দ্যনীয়া!
সুরধুনি স্রোতস্বিনী,
মগজে বেগম আখতার
শিরায় হলাহল,
তুমি নৈপুণ্য
তুমিই গরল।
বেয়াত্রিচা।। আমি জল।
আমি এক জল।
আমি।। চর্যাপদের আগে তুমি ক্লান্তি,
তুমি ম্লানিমা, তুমি ক্ষত চিরকায়া
তুমি বিহগ ডানায় শূণ্যতা
নভনীলে নিঃসঙ্গতা,
তুমি জল যাতে আচমন নেই
তুমি জল যাতে স্নান নেই
তুমি ত্রিপাদ ভূমি নাস্তি পদার্পণ।
তুমি কণাদ যে ব্রহ্মান্ডে পরমাণু নেই?
তুমি সংস্থিত, আবেগে বৈকল্য নেই?
বেয়াত্রিচা।। আমি জল
আমি শুধু জল,
গড়াই জীবন
আমি।। আঙুলের ফাঁক থেকে অপসৃয়মাণ?
তুমি জল আমি অভিমান,
তুমি জল, আমি কোলাহল
তুমি জল নিষণ্ণ নাভি
আমি ব্যাপক অশান্তি
বেয়াত্রিচা।। আমি আত্মহত্যার আগে
আমি।। হত্যার পরেও তুমি বেয়াত্রিচে।
আমি শুধু ভৃত্য হইনি কখনো!
চাঁদের আলস্য জড়িয়ে আমি
একাসনে হত ও হন্তারক,
আমি সে বাউলগান
নাভি থেকে স্বর
গগনের তুঙ্গ ছিন্ন করে আর্তনাদ
মাঠে মাঠে জ্যোৎস্না,
আমাকে জড়াতে হবে আবশ্যক,
আমাকে মাখতে হবে ধ্বংসের আগেও-
বেয়াত্রিচা।। বাগানে বেদনা ফুটেছে যুঁইফুল হয়ে
আমি।। নির্মল বাগান হয়ে সভ্যতা ফোটেনি তবু।
বেয়াত্রিচা।। আমি শুধু জল
হন্যমান জল।
আমি।। আমি অন্ধকার সখী,
আমি অনাদি সরল।
বেয়াত্রিচা।। এবারে বিদায় হবে
আমি।। ভাসান মাহেন্দ্রক্ষণে?
লগ্নে লেগেছে পূষণ
বিধুরা চাঁদের?
বেয়াত্রিচা।। এবারে জলের কাব্য
আমি।। এবারে পাবক-নির্বাণ ?
বিরহের চিরায়ত গান?
বেয়াত্রিচা।। এবারে শেষের কাব্য
গোধুলি ধুসর-
আমি জল
আমি সার্বিক উপেক্ষা,
আমি উদাসীনা
আমি সতত তরল।
আমি।। আমি দীনতা,
ত্রুবাদুর দেবদূতি,
আমাকে ভুলতে গেলে
তোমার বিচ্যুতি।
জল নও, তুমিই বরফ
ভাষা নও, শুধুই হরফ
চোখের মণির থেকে টুকরো টুকরো কেটে
তোমার কোলাজ বানাবো,
আমি আস্পর্ধা, পরমান্ন অবহেলা করে যাব;
স্থির মণিটি থেকে তোমাকেই কেটে
ডুবন্ত জাহাজ বানাবো,
আমি প্রেম, জলকে জীবন দেখাবো-